শিরোনাম

15/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

ফরাসি মুসলিমদের ক্ষোভ-দুঃখ প্রকাশ

 

ফ্রান্সের সমুদ্র উপকূলবর্তী নিস শহরে সন্ত্রাসী হামলায় তিনজন নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনায় দেশটির মুসলিমরা ক্ষোভ ও গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, এই অপরাধ তাদের কোনও মূল্যবোধ কিংবা বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্ব করে না।

বৃহস্পতিবার নিস শহরের একটি গির্জায় এক অভিবাসনপ্রত্যাশী তরুণ ছুরি হামলা চালায়। এতে অন্তত তিনজনের প্রাণহানি ঘটে। তাদের মধ্যে একজনের শিরশ্ছেদ করে ওই তরুণ। ফ্রান্সের সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোর যখন চরম উত্তেজনা চলছে; সেই সময় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে ফ্রান্সে গত এক মাসে অন্তত তিনটি হামলার ঘটনা ঘটল।

ইসলাম ধর্মের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন প্রদর্শনের পক্ষে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সাফাই গাওয়ার পর গত সপ্তাহে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক দেয়।

স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাক-স্বাধীনতার ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠের একটি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন প্রদর্শন করেন। এ ঘটনার পর গত ১৬ অক্টোবর ১৮ বছর বয়সী এক চেচেন কিশোর স্যামুয়েলকে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করেন।

স্যামুয়েল হত্যাকাণ্ডের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন প্রদর্শনী অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। এ নিয়ে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার নিস শহরের একটি গির্জায় হামলা চালায় তিউনিশিয়া থেকে ফ্রান্সে পাড়ি জমানো এক তরুণ।

ফ্রান্সের মুসলিমরা এ ধরনের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। দেশটির মানবাধিকার কর্মী ইয়াসির লুয়াতি বলেন, এ ধরনের অপরাধের হোতারা মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে কোনও বিভেদ তৈরি করতে পারবে না।

তিনি বলেন, একটি গির্জার ভেতরে একজন নারীর শিরশ্ছেদ করা হয়েছে। এর অর্থ হলো- পবিত্র স্থানের সঙ্গে এই অপরাধীদের কোনও সম্পর্ক নেই। তাদের নৈতিক কোনও সীমানা নেই। ফরাসি এই মুসলিম নারী মানবাধিকার কর্মী বলেন, বিশ্বজুড়ে মসজিদে প্রায় সাড়ে ৭০০ মুসলিম খুন হয়েছেন। আমরা এই বিষয়গুলোকে এক করে দেখতে পারি না। কারণ মতাদর্শের যুদ্ধে আমরা এ ধরনের চরমপন্থী মতাদর্শকে হারিয়েছি।

ঘৃণায় উসকানি দেয়ার অভিযোগ এনে বুধবার ফ্রান্সের সরকার দেশটির মুসলিম মানবাধিকারবিষয়ক বেসরকারি সংস্থা বারাকাসিটি চ্যারিটি-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু নিস শহরের গির্জায় ছুরি হামলার নিন্দা জানিয়েছে এ সংস্থাটিও।

সংস্থাটির কর্মী ইদরিস সিহামেদি বলেন, এটি গুরুতর হামলা। আসলে এই ঘটনাটি এমন এক স্থানে ঘটেছে যেখানে মানুষ শান্তি কামনা করতে আসেন। হামলায় হতাহত এবং পূর্ণ বিশ্বাসীদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ফ্রান্স উন্মত্ততা, বিদ্বেষ, ক্ষোভ এবং প্রতিশোধের মাঝে ডুবছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ