প্রতিবেদক : অর্ণব আবীর
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে অপরাধীরা এখন বেছে নিচ্ছে নৌপথ। এই পথে প্রায়ই ঘটছে ধর্ষণ, খুনের মতো ঘটনা। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চে একাধিক হত্যাকাণ্ড ভাবিয়ে তুলেছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন যাত্রীরা। লঞ্চ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকেই দুষছেন সংশ্লিষ্টরা।
বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলার মানুষের নৌপথে যাতায়াতের অন্যতম বাহন লঞ্চ। ক্লান্তি ও আরামদায়ক হওয়ায় রাজধানী ঢাকা থেকে বরিশালের বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা লঞ্চ-যোগে যাতায়াত করে থাকেন।
তবে এই নৌযানে একের পর এক ধর্ষণ, ছিনতাই ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটায় শঙ্কিত যাত্রীরা। এ ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি লঞ্চ যাতায়াতে অনাস্থার সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা
এ বিষয়ে বরিশাল নাগরিক সমাজের যুগ্ম সম্পাদক এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষদের মধ্যে অনাস্থার সৃষ্টি হলে লঞ্চ যাতায়াতের ব্যাপারে ভোগান্তি তৈরি হবে। এ কারণে অবিলম্বে আইনশৃঙ্খলায় যারা নিয়োজিত আছে, বিশেষ করে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ও মালিক পক্ষ যারা রয়েছেন। সকলে সতর্ক অবস্থানে গিয়ে এই সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে।
বড় বড় লঞ্চের নীচতলা ও দ্বিতীয় তলায় আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করলেও তৃতীয় তলায় কেবিনে, ছাদে নিরাপত্তার বিষয়টি তদারকি করে না লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এ কারণেই হত্যা এবং লাশ উদ্ধারের মতো ঘটনা ঘটে বলে জানান বরিশাল নৌপুলিশের এএসপি মো. আহসান হাবিব।
তিনি বলেন, লঞ্চে মাত্র তিন জন নিরাপত্তা কর্মী আছে। তারা যাত্রীদের নিরাপত্তার চেয়ে বেশি মালিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নজরদারি করে। তিনতলার কেবিনগুলোতে অনেক যাত্রী থাকে, কিন্তু সেখানে তারা যায় না। এটা আমাদের কাছে স্বীকার করে তারা বলেছে, তারা নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় শুধু ডিউটি করে।
লঞ্চে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি কেবিনের টিকিট বিক্রির সময় যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি রাখার পরামর্শ দিয়েছে লঞ্চ মালিক সমিতি।
যাত্রীবাহী লঞ্চ মালিক সমিতি সভাপতি শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, যে যখন বলে তখনই কেবিন বুক করা হয়। কিন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েই কেবিন বুক করলে কিছুটা অঘটন কমবে।
গত ১৬ নভেম্বর রাতে ঢাকা-বরিশাল রুটে সুন্দরবন- ১১ লঞ্চের ছাদে এক পোশাককর্মী যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর পারাবত-১১ লঞ্চের ৩৯১ নম্বর কেবিন থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

0 মন্তব্যসমূহ